Header Ads

এই সময়ের ডেঙ্গু (dengue) জ্বর কেন আলাদা, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা নির্দেশনা

 


২০০০ সালে প্রথমবার দেশের ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তখনকার ডেঙ্গু রোগীরা মূলত প্রাইমারি ইনফেকশনে আক্রান্ত ছিল। উপসর্গ হিসেবে তীব্র জ্বর, গায়ে ব্যথা, চোখে ব্যথা এবং ফুসকুড়ি দেখা দিত। জটিলতার হারও ছিল তুলনামূলকভাবে কম।

কিন্তু বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভিন্ন। অধিকাংশ রোগীই সেকেন্ডারি ইনফেকশনে আক্রান্ত। এর ফলে উপসর্গ এবং জটিলতাও আলাদা। হালকা বা মাঝারি জ্বর, অরুচি, বমি ভাব বা পাতলা পায়খানার মতো উপসর্গ এখন সাধারণত বেশি দেখা যায়।

ডেঙ্গুর প্রকারভেদ:

বর্তমান সময়ে ডেঙ্গু তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হয়:

  1. গ্রুপ-এ: কোনো জটিলতা নেই।
  2. গ্রুপ-বি: বিপৎসংকেতযুক্ত রোগী বা পূর্বের ক্রনিক রোগীদের অন্তর্ভুক্ত।
  3. গ্রুপ-সি: তীব্র জটিলতা, যেমন শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ কমে যাওয়া, অথবা কোনো অঙ্গের কার্যক্ষমতা হ্রাস।

বিপদ সংকেত: গ্রুপ-বি রোগীদের ক্ষেত্রে জ্বরের সঙ্গে পেটে ব্যথা, বেশি বমি, রক্তক্ষরণ, শ্বাসকষ্ট, শরীর ঠান্ডা হওয়া এবং প্রস্রাব কমে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে, দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।

রক্তচাপ ও চিকিৎসা: ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের রক্তচাপ সবসময় 'স্বাভাবিক' মনে হলেও তা বিপজ্জনক হতে পারে। তাই 'পালস প্রেশার' চেক করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। যদি পালস প্রেশার ২০-এর নিচে হয়, দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

চিকিৎসা: প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দিনেই এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন এবং সাত দিন পর অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করানো উচিত। রোগীর শারীরিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা বাড়িতে বা হাসপাতালে করা হবে।

বাড়িতে চিকিৎসা: ডেঙ্গু রোগীদের পর্যাপ্ত তরল পানীয় যেমন ডাবের পানি, স্যালাইন, এবং ফলের রস খাওয়ানো জরুরি। প্যারাসিটামল সেবন করা যেতে পারে তবে অ্যাসপিরিন এড়িয়ে চলতে হবে।

জটিলতা এড়ানোর উপায়:

বর্ষার সময়, যখন এডিস মশার প্রাদুর্ভাব বেশি, ডেঙ্গু জ্বরের যেকোনো লক্ষণ দেখলেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। জ্বরের প্রথম দিনেই এনএসওয়ান অ্যান্টিজেন পরীক্ষা ও সিবিসি (CBC) করানো দরকার। ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হতে সাত দিন সময় লাগে, তাই সঠিক সময়ে সঠিক পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয়ের গুরুত্ব: ডেঙ্গু নির্ণয়ে সময়মতো পরীক্ষা ও শারীরিক পরীক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও শারীরিক পরীক্ষায় ডাক্তার জটিলতার লক্ষণ দেখতে পারেন। হেমাটোক্রিট বৃদ্ধি, ফুসফুস বা পেটে পানি জমা ইত্যাদি জটিলতার সূচনা নির্দেশ করে, যা সময়মতো শনাক্ত হলে চিকিৎসা আরও কার্যকর হয়।

প্লাটিলেটের গুরুত্ব: ডেঙ্গু জ্বরে প্লাটিলেট কমা একটি সাধারণ ব্যাপার। তবে প্লাটিলেটের সংখ্যা বিপজ্জনকভাবে কমে না যাওয়া পর্যন্ত এটি বড় উদ্বেগের কারণ নয়।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.