Header Ads

নবজাতকের রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়া: সমস্যা ও করণীয় (Decreased blood glucose in neonates)

গর্ভাবস্থায় মায়ের কোনো রোগ, প্রসবকালীন জটিলতা, জন্মগত ত্রুটি, এবং জন্মের পর সংক্রমণ বা অন্যান্য রোগ শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম গুরুতর জটিলতা হলো নবজাতকের হাইপোগ্লাইসেমিয়া, অর্থাৎ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সংজ্ঞা

নবজাতকের হাইপোগ্লাইসেমিয়া বিভিন্ন মাত্রায় নির্ধারিত হয়, যা শিশুর গর্ভাবস্থার সময়কাল, ওজন, এবং জন্মের পর বয়সের ওপর নির্ভর করে। সাধারণভাবে, যদি নবজাতকের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ৫০ মিলিগ্রাম/ডিএল বা ২.৭ মিলিমোল/লিটারের কম হয়, তখন সেটিকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হয়। প্রতি হাজার নবজাতকের মধ্যে ১.৩ থেকে ৩ জন এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে।

নবজাতকের হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ধরন

এই সমস্যা দুটি প্রধান ধাপে বিভক্ত: অস্থায়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী।

১. অস্থায়ী হাইপোগ্লাইসেমিয়া:

শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজের রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। এর আগ পর্যন্ত শিশুর মাতৃগর্ভ থেকে প্রাপ্ত গ্লুকোজ এবং মাতৃদুগ্ধের ওপর নির্ভর করে। তবে, কিছু কারণ এই স্বল্প সময়ে অস্থায়ী হাইপোগ্লাইসেমিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যেমন:

  • ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়ের সন্তান
  • অপরিপক্ব বা স্বল্প ওজনের নবজাতক
  • গর্ভাবস্থায় মায়ের নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণ
  • শিশুর জন্মগত বিপাকীয় ত্রুটি বা সংক্রমণ

এ ধরনের সমস্যায় শিশুর খিঁচুনি হতে পারে এবং মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই প্রসবের আগে থেকেই সচেতনভাবে এসব ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।

২. দীর্ঘস্থায়ী হাইপোগ্লাইসেমিয়া:

দীর্ঘস্থায়ী হাইপোগ্লাইসেমিয়ার অন্যতম কারণ হলো শিশুর শরীরে অতিরিক্ত ইনসুলিন তৈরি হওয়া। এছাড়াও বিভিন্ন হরমোন ও এনজাইমের ঘাটতি, লিভারের গ্লুকোজ বিপাকের সমস্যা, এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও এ সমস্যার কারণ হতে পারে।

করণীয়

নবজাতকের জন্মের পর যেসব শিশু হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, তাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। যদি শিশু খিঁচুনি, বমি বা অস্বাভাবিক আকৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে, তবে অবশ্যই গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হবে।

হাইপোগ্লাইসেমিয়া ধরা পড়লে, প্রাথমিকভাবে শিশুকে বাইরে থেকে গ্লুকোজ সরবরাহ করে এবং মুখে খাবার দিয়ে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যদি এরপরও সমস্যা থাকে, তবে দীর্ঘস্থায়ী হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সম্ভাব্য কারণ বিবেচনা করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.