Header Ads

কান বন্ধ হয়ে গেলে কী করবেন? সাধারণ কারণ ও দ্রুত সমাধান (Ear blockage problem)


আমাদের কানের মধ্যভাগ বা মধ্যকর্ণ ইউস্টেশিয়ান টিউব নামক একটি নল দিয়ে নাকের পেছনের দিকে সংযুক্ত থাকে। এই টিউবটি কোনো কারণে বন্ধ হয়ে গেলে কানে বন্ধভাব অনুভূত হতে পারে। এর ফলে কানে ভারী ভাব, চাপ বা অন্যান্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে। কানের খইল জমা, সংক্রমণ, কিংবা কানের ভেতরের চাপের আকস্মিক পরিবর্তন এর কারণ হতে পারে।

উপসর্গ

কান বন্ধ হয়ে গেলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন:

  • মাথা ঘোরা
  • কাশি
  • কানে ব্যথা
  • কান ভারী লাগা
  • কানে চুলকানি
  • কান থেকে তরল নির্গমন বা দুর্গন্ধ
  • কানে গুঞ্জন (ভোঁ ভোঁ) বা ফড়ফড় শব্দ শোনা
  • শ্রবণে অসুবিধা বা কম শোনা

কারণ

কানের নালির বাইরের অংশ ত্বক দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে, যেখানে খইল নিঃসরণের গ্রন্থি থাকে। খইল কানের কর্ণপটককে বাইরের ধুলাবালি ও ক্ষতিকর কণা থেকে সুরক্ষিত রাখে। সাধারণত খইল সামান্য পরিমাণে কানের বাইরের দিকে বের হয়, কিন্তু অতিরিক্ত খইল নিঃসরণ হলে বা ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে তা জমতে থাকে, ফলে কান বন্ধ হয়ে যায়। যারা কটনবাড, বলপেন, বা পিন দিয়ে কানের ভেতর পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন, তাঁদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।

অন্যান্য কারণ

  • সাইনাসের সংক্রমণ, ঠান্ডা বা অ্যালার্জির কারণে ইউস্টেশিয়ান টিউবের প্রদাহ
  • কানে পানি জমা
  • গাড়ি চালানো, বিমানে ভ্রমণ বা উচ্চতার পরিবর্তন
  • অটোমাইকোসিস (কানের ফাঙ্গাল ইনফেকশন)
  • কানে কিছু ঢুকে যাওয়া

রোগনির্ণয়

কান বন্ধ হওয়ার সমস্যা নির্ণয়ের জন্য সাধারণত অটোস্কোপ নামের একটি বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।

চিকিৎসা

কিছু সাধারণ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ইউস্টেশিয়ান টিউব অবরুদ্ধ থাকলে কানের সমস্যা দূর করা সম্ভব:

  • চিনিমুক্ত চুইংগাম চিবানো
  • নাক ও মুখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া

যদি কানের খইল জমে নল বা গহ্বর বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে:

  • চিকিৎসক ফরেন বডি হুক বা অন্যান্য যন্ত্র দিয়ে খইল পরিষ্কার করে থাকেন
  • সাকশানের মাধ্যমে খইল সরানো হয়
  • সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়

অটোমাইকোসিস বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ নিতে হবে। যাদের অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ বা নাসাল স্প্রে ব্যবহার করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারও প্রয়োজন হতে পারে।

অধ্যাপক ডা. এম আলমগীর চৌধুরী: বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.